এপ্রিল ২০২৫ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ব্যবস্থার ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রভাবের উপর দেশভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটি গভীর বিশ্লেষণ এখানে প্রদান করা হয়েছে। এই শুল্কগুলি বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, বিশেষত এশিয়া এবং তার বাইরের দেশগুলিতে, যার ফলে প্রত্যেকটি সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ফলাফল ঘটেছে।
চীন
শুল্ক প্রভাব: চীনকে ৫৪% এর সর্বোচ্চ পাল্টা শুল্কের সম্মুখীন হতে হচ্ছে, যার মধ্যে একটি ১০% শুল্ক এবং অতিরিক্ত ৪৪% শুল্ক যুক্ত রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসাবে, এই নাটকীয় শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য সম্পর্কের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে, বিশেষত প্রযুক্তি এবং উৎপাদন ক্ষেত্রগুলোতে।
আর্থিক পরিণতি: চীনের অর্থনীতি ইতিমধ্যে অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন এবং বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তাই এই শুল্কযুদ্ধ প্রযুক্তি এবং উৎপাদন খাতে ধীরগতির সৃষ্টি করতে পারে। এই শুল্কগুলি চীনকে পাল্টা ব্যবস্থার গ্রহণে উৎসাহিত করতে পারে, যা আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: চীনের সরকার এই পদক্ষেপটিকে মুক্ত বাণিজ্যের নীতির লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা করেছে এবং মার্কিন পণ্যগুলির উপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে। এর ফলে একটি বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হতে পারে, যা বৈশ্বিক বাজার সংকুচিত করতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: চীন দীর্ঘমেয়াদে তার বাণিজ্য অংশীদারদের বৈচিত্র্য বাড়ানোর এবং অভ্যন্তরীণ ভোক্তা খাতে মনোযোগ দেওয়ার উপর নজর দিতে পারে, কিন্তু পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ভিয়েতনাম
শুল্ক প্রভাব: ভিয়েতনামের পাল্টা শুল্ক হার ৪৬%, যা এশিয়া মহাদেশের দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতিতে, বিশেষত ইলেকট্রনিক্স, পোশাক এবং জুতোর খাতে, ভিয়েতনামের উৎপাদন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আর্থিক পরিণতি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির মাধ্যমে ভিয়েতনামের দ্রুত শিল্পায়ন বৃদ্ধি পেয়েছিল, তবে এই শুল্কগুলি তা থামিয়ে দিতে পারে। ইলেকট্রনিক্স খাত, যা ভিয়েতনামের জিডিপিতে একটি বড় ভূমিকা রাখে, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে এটি বৈশ্বিক বাজারে তার প্রতিযোগিতা কমে যেতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: ভিয়েতনামের সরকার বাণিজ্যের উপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটি শুল্ক হ্রাসের জন্য কূটনৈতিক চ্যানেল অনুসন্ধান করতে পারে এবং অন্য দেশের সাথে নতুন বাণিজ্য চুক্তির জন্য চেষ্টা করতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: ভিয়েতনাম সম্ভবত ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা আঞ্চলিক বাণিজ্য ব্লকের মতো বিকল্প বাজারে মনোযোগী হতে পারে, তবে এই শুল্কগুলির তাৎক্ষণিক প্রভাব তার উৎপাদন বৃদ্ধির গতিকে ব্যাহত করতে পারে।
ভারত
শুল্ক প্রভাব: ভারতের পাল্টা শুল্ক ২৬%, যা তার রপ্তানি খাতকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করবে, বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি, পোশাক এবং কৃষি খাতগুলোকে। এই শুল্কগুলি ভারতের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টাকে দুর্বল করতে পারে।
আর্থিক পরিণতি: ভারতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কারণ মার্কিন আমদানির উপর নির্ভরশীল শিল্পগুলো—যেমন প্রযুক্তি সেবা এবং ফার্মাসিউটিক্যাল—শুল্ক বৃদ্ধির কারণে খরচ এবং চাহিদা কমে যেতে পারে। ভারতীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলিকে তাদের খরচ কাঠামো পুনর্বিন্যস্ত করতে হতে পারে, যাতে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: ভারত এই শুল্কগুলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার বাণিজ্য সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে পারে। ভারত সম্ভবত নতুন শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা শুরু করবে অথবা অন্যান্য আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাইবে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: ভারত সময়ের সাথে সাথে তার বাণিজ্য অংশীদারিত্ব এশিয়া এবং আফ্রিকায় বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হতে পারে, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার বাণিজ্য বৃদ্ধির যে ক্ষতি হবে তা তার দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি ধীর করতে পারে।
<img src ='https://cms.thepapyrusbd.com/public/storage/inside-article-image/l3af4g0tj.jpg'>
জাপান
শুল্ক প্রভাব: ২৪% পাল্টা শুল্কের সম্মুখীন, জাপান বিশেষভাবে তার মোটরগাড়ি এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পে চাপ অনুভব করবে, যেখানে তার মার্কিন বাজারে উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে। মার্কিন প্রস্তুতকারকদের সাথে জাপানের উচ্চ-ইন্টিগ্রেটেড সরবরাহ চেইনও বিপদগ্রস্ত হতে পারে।
আর্থিক পরিণতি: জাপানের মূল শিল্পগুলো, বিশেষত মোটরগাড়ি উৎপাদন (যেমন টয়োটা, হন্ডা) মার্কিন বাজারে চাহিদা কমতে পারে। সনি এবং পানাসনিকের মতো ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিগুলোও উচ্চ শুল্কের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: জাপান একতরফা এই শুল্ক পদক্ষেপগুলির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) সাথে আলোচনা করতে চাইবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: জাপান সম্ভবত এশিয়া (RCEP) এবং ইউরোপের সাথে তার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাইবে, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা যায়।
দক্ষিণ কোরিয়া
শুল্ক প্রভাব: জাপানের মতো, দক্ষিণ কোরিয়া তার আমেরিকার বাজারে গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর এবং ইস্পাত পণ্যগুলির উপর নির্ভরশীলতার কারণে যথেষ্ট বাণিজ্য বিঘ্নিত হবে। ৩০% পাল্টা শুল্ক দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি খাতকে আঘাত করবে।
আর্থিক পরিণতি: দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বড় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, যেমন স্যামসাং এবং হুন্ডাই, তাদের পণ্যগুলির চাহিদা কমে যেতে পারে। শুল্কের কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যগুলির প্রতিযোগিতা কমে যেতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার কোরাস এফটিএ চুক্তির পুনঃসাক্ষরিত করতে চাইবে, যাতে এই শুল্কগুলির নেতিবাচক প্রভাব কমানো যায় এবং শুল্কের হ্রাসের জন্য সুবিধা পাওয়া যায়।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: দক্ষিণ কোরিয়া সম্ভবত তার রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্য করতে চাইবে, ASEAN এবং চীনকে লক্ষ্য করে, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার আন্তঃনির্ভরতা তাকে এই পরিবর্তনগুলো করতে কিছুটা কঠিন করতে পারে।
তাইওয়ান
শুল্ক প্রভাব: তাইওয়ানের উচ্চ-প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্প বিশেষভাবে এই শুল্কের মুখোমুখি, যার ফলে ৩২% পাল্টা শুল্কের প্রভাব পড়বে। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর এবং ইলেকট্রনিক উপাদান উৎপাদনে একটি বড় ভূমিকা রাখে, তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আর্থিক পরিণতি: তাইওয়ান প্রচুর বাণিজ্য ভারসাম্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর এবং আইটি শিল্পে। এই খাতগুলো, যা বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে গুরুত্বপূর্ণ, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে উচ্চ খরচের সম্মুখীন হতে পারে, যার ফলে প্রতিযোগিতা কমে যেতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: তাইওয়ান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করতে পারে এবং নতুন বাণিজ্য চুক্তির জন্য এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে উদ্যোগ নিতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্ভাবনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক এবং চীনের আঞ্চলিক প্রভাবের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার উপর নির্ভর করবে।
<img src ='https://cms.thepapyrusbd.com/public/storage/inside-article-image/27g1imoab.jpg'>
কেম্বোডিয়া
অর্থনৈতিক প্রভাব: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর ৪৯% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এটি কেম্বোডিয়ার গার্মেন্ট শিল্প, যা দেশটির অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত, এর জন্য বিপদজনক হতে পারে। এই শিল্পে প্রায় ১ মিলিয়ন কর্মী নিয়োজিত, যাদের বেশিরভাগই মহিলা। এসব কর্মীদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে, যার ফলে দেশটির অর্থনৈতিক চিত্র ভেঙে যেতে পারে।
সামাজিক পরিণতি: গার্মেন্ট শিল্পের জন্য চাকরি হারানো নারী নেতৃত্বাধীন পরিবারগুলির জন্য দারিদ্র্য বাড়িয়ে তুলতে পারে। আয় কমে গেলে ঋণের চাপ বাড়বে এবং মৌলিক সেবায় প্রবেশের পথ সংকুচিত হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: কেম্বোডিয়ার সরকার এই শুল্কগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যগুলির উপর শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনা চালানোর চেষ্টা করবে, যাতে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত না হয়।
বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক প্রভাব: বাংলাদেশের উপর ৩৭% পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা দেশের রপ্তানি-নির্ভর শিল্প, বিশেষ করে গার্মেন্ট এবং টেক্সটাইল খাতকে বিপদের মধ্যে ফেলবে। এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশি পণ্যের আমেরিকান বাজারে প্রতিযোগিতা কমে যেতে পারে, যার ফলে রপ্তানি রাজস্ব হ্রাস পেতে পারে।
সামাজিক পরিণতি: গার্মেন্ট শিল্পের সংকট চাকরি হারানোর কারণ হতে পারে, যা লাখ লাখ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলবে। এতে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে এবং সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে এবং নতুন বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে এই শুল্কের প্রভাব হ্রাস করতে চেষ্টা করবে।
লাওস
অর্থনৈতিক প্রভাব: লাওসের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৮% শুল্ক আরোপ করেছে, যা দেশটির কৃষি এবং উৎপাদন খাতের জন্য বিপদজনক হতে পারে। এই শুল্কের ফলে রপ্তানি হ্রাস পেতে পারে এবং জাতীয় আয় কমে যেতে পারে।
সামাজিক পরিণতি: কম রপ্তানি রাজস্ব সরকারের অবকাঠামো, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ সীমিত করতে পারে, যা দারিদ্র্য কমানোর প্রচেষ্টা ব্যাহত করবে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: লাওস প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির মাধ্যমে এই অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করবে এবং নতুন বাজার খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।
শ্রীলঙ্কা
অর্থনৈতিক প্রভাব: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪% শুল্ক শ্রীলঙ্কার টেক্সটাইল এবং চা রপ্তানির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এই শুল্কের ফলে শ্রীলঙ্কার পণ্যগুলির চাহিদা কমে যেতে পারে, যা বিদেশী মুদ্রার আয় কমিয়ে দিতে পারে।
সামাজিক পরিণতি: রপ্তানি রাজস্ব কমে যাওয়ার কারণে সরকারী পরিষেবাগুলি এবং সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচি প্রভাবিত হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: শ্রীলঙ্কা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা বাড়াতে এবং অন্য দেশের সাথে বাণিজ্য অংশীদারিত্বের মাধ্যমে শুল্কের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করবে।
মার্কিন শুল্কগুলি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নয়—এগুলো ভূরাজনৈতিক সরঞ্জাম যা ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। চীন এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলি শুল্ক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন, অন্যদিকে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনঃমূল্যায়ন করতে চাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নির্ভরশীল দেশগুলো, যেমন তাইওয়ান এবং ভারত, শুল্কের কারণে বিশেষ চাপের মুখোমুখি হবে।
দীর্ঘমেয়াদে, এটি বৈশ্বিক বাণিজ্য জোটের একটি বড় ধরনের পুনর্গঠন ঘটাতে পারে, কারণ দেশগুলি তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা কমাতে বিকল্প বাণিজ্য অংশীদার খুঁজতে পারে। এসব পরিবর্তন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিভক্ত করে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি একটি উচ্চ অগ্রাধিকার পেতে পারে।
তাত্ক্ষণিক ভবিষ্যতে বাণিজ্য বিরোধ এবং পাল্টা শুল্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের জন্য খরচ বেড়ে যেতে পারে। এটা দেখার বিষয় হবে মার্কিন প্রশাসন কিভাবে অর্থনৈতিক সুরক্ষা নীতি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য স্থিতিশীলতার বৃহত্তর লক্ষ্যকে সমন্বয় করবে।